রহমত নিউজ 14 August, 2024 10:11 PM
ভারতে বসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করলে বাংলাদেশের মাটিতে ভারতীয় দূতাবাস থাকতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিক মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা খুনের নেশায় মাতাল হয়ে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আখড়া বেঁধেছেন। ভারতে বসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করা হয় তাহলে বাংলাদেশের মাটিতে ভারতীয় দূতাবাস থাকতে দেওয়া হবে না।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে দেশব্যাপী নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার উদ্যোগে স্থানীয় পৌর মুক্তমঞ্চে আয়োজিত সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন।
দেশব্যাপী নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হেফাজতে ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা পৌর মুক্তমঞ্চে এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মুফতী মুবারকউল্লাহ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মহাসচিত শায়খ সাজিদুর রহমান।
সমাবেশে মাওলানা মামুনুল হক আরো বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি নরেন্দ্র মোদির ঘরে বসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। ১৫ বছরে হাতুড়ি লীগের পরিচিতি পাওয়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা সেই অপতৎরতা চালানোর চেষ্টা করছেন। কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করা হলে তা প্রতিহত করা হবে।
এ সময় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মুফতী মুনির হুসাইন কাসেমী, মুফতী সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মুফতী কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, মাওলানা আলী আজম, মাওলানা দ্বিন মুহাম্মাদ আশরাফ, মাওলানা তানভির আহমাদ, মাওলানা আহমাদ আলী, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মাওলানা মারুফ কাসেমী, মাওলানা শরীফ, মাওলানা মেরাজুল হক কাসেমী, মাওলানা উবাইদুল্লাহ মাদানী, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম ফারুকী, মুফতী মাজহারুল হক কাসেমী, মাওলানা আব্দুল হান্নান, মাওলানা আমজাদ হুসাইন আশরাফী, মাওলানা ইসহাক আল হুসাইন, মাওলানা লুৎফর রহমানসহ কেন্দ্রীয় ও স্থনীয় প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে ৮ দফা প্রস্তাবাবলী পাঠ করা হয়:
১। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কোটা সংস্কার ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শাহাদাত বরনকারী সকল শহীদের মাগফিরাত কামনা করছে এবং আহতদের সু-চিকিৎসা ও সার্বিক সহযোগিতার জন্য সরকার, হেফাজত নেতাকর্মী ও আলেম সমাজসহ জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
২। যারা বিগত ২০০১, ২০১৩ ও ২০২১ সালে হেফাজত নেতা কর্মীসহ নিরীহ, নিরস্র জনগণকে নির্বিচারে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং হেফাজত নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।
৩। ২০২১ সালের মার্চের ২৬. ২৭ ও ২৮ তারিখে ১৫ জনকে নির্মমভাবে হত্যার মূলনায়ক ওবায়দুল মুক্তাদির সহ দোষীদের গ্রেফতার করে আইনানুগ বিচারের দাবি জানাচ্ছে।
৪। শিক্ষানীতিতে নাস্তিক্যবাদবাদ ও ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো বাদ দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে।
৫। চলমান পরিস্থিতিতে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাই হেফাজতে ইসলামের প্রধান লক্ষ্য। সর্বস্তরের জনগণ, নেতাকর্মী ও আলেম সমাজকে সর্বোচ্চ ধৈর্য্য, পরস্পর সহনশীলতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।
৬। ব্রাক্ষণবাড়িয়াসহ গোটা দেশের হিন্দুদের মন্দির, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় যাতে আক্রান্ত না হয়, সেজন্য আমাদের সকলকে দায়িত্ব পালন করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। উল্লেখ্য, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার জামিয়া ইসলামীয়া ইউনুছিয়াসহ অন্যান্য মাদরাসার শিক্ষার্থীরা মন্দিরে পাহারা দিয়ে যাচ্ছে।
৭। দেশ ও ইসলামের শত্রু কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণার জন্য সরকারের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।
৮। রাষ্ট্র ও জনগণের যে কোন প্রয়োজন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ কাজ করতে সদা প্রস্তুত। প্রয়োজনে তাদের পরামর্শ ও মতামত নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।